আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে চীনা সাবমেরিনের আনাগোনা এবং প্রস্তুতি দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েছে ভারত। বিষয়টিকে ভারত মহাসাগরে দেশটির প্রভাব ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি। আর ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষাবন্ধন আরও দৃঢ় করায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বলে দিচ্ছে, এ ব্যাপারে তারাও চিন্তিত।
ভারতীয় নৌবাহিনী সূত্রমতে, কিছু মাস ধরে ভারত মহাসাগরে প্রতি তিন মাসে গড়ে চারবার করে চীনা সাবমেরিনের উপস্থিতি শনাক্ত করেছে তারা। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার সাবমেরিনগুলোকে একেবারে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি মালাক্কা প্রণালি এলাকায় আনাগোনা করতে দেখা গেছে। এই প্রণালিকে দক্ষিণ চীন সাগরের প্রবেশপথ বলা হয়। এখান দিয়েই জলপথে চীনা জ্বালানি পরিবহনের ৮০ শতাংশ হয়ে থাকে।
বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরের মতো ভারত মহাসাগরেও নিজের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ আশঙ্কা থেকেই দশকের পর দশক সামরিক কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার নীতি থেকে সরে এসেছে ভারত। গত মাসেই সামরিক খাতে পারস্পরিক সহযোগিতায় একমত হয়েছে দুই দেশ। এ ছাড়া সাবমেরিন ঠেকানোর রণকৌশল বা অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার (এএসডব্লিউ) ইস্যুতে উভয় পক্ষের নৌবাহিনীর নিয়মিত বৈঠকেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ না হলে কোনো রাষ্ট্রই অন্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক করে না।
ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি সূত্র বলছে, উভয় পক্ষের আলোচনায় আগামী জুনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ফিলিপাইন সাগরের উত্তরাঞ্চলে যৌথ মহড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহড়ায় অংশ নেবে জাপানও। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকবার চীনা সাবমেরিনের আনাগোনা শনাক্ত করেছে।
এসব ছাড়াও দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রস্তুত পারমাণবিক মিসাইল ছুড়তে সক্ষম ভারত নিজের প্রথম সাবমেরিনটিও ভাসানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ।
এদিকে চীনও চুপ করে নেই। নিজের জ্বালানি ও বাণিজ্যিক সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে বন্দর ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণসহ ভারত মহাসাগরে শ্রীলঙ্কার মতো দ্বীপদেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুতে মনোযোগী হয়েছে দেশটি। এ ছাড়া বেইজিংয়ের স্বার্থরক্ষায় হুমকি হয়ে উঠতে পারে, এমন দেশগুলোর কাজকর্মেও নজর রাখা হচ্ছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনাইংয়ের মন্তব্যেই এর প্রমাণ মেলে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে সম্প্রতি তিনি বলেন, এই অঞ্চলে সামরিক সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হওয়া দেশগুলোর ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছে চীন। আমরা আশা করছি, এ সহযোগিতার বিষয়গুলো অন্য সব বিষয়ের মতোই স্বাভাবিক।