নিউজ ডেস্কঃ ৫ম উপজেলা নির্বাচনের পর সাতক্ষীরার কলারোয়া পরিনত হয়েছে এক আতংঙ্কিত জনপদে। নৌকা ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মতদ্বন্দ্বকে পুঁজি করে জামাত বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রসী, চার্জশীট ভুক্ত ওয়ারেন্টের আসামীরা এখন প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগ তথা নৌকার কর্মী সমর্থকদের কে আক্রমনের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করেছে। ২৪শে মার্চের নির্বাচনের রাত থেকে এ পর্যন্ত উপজেলার ১৫৩ টি গ্রামের মধ্যে অন্তত ৮০ থেকে ১০০ গ্রামে নৌকার কর্মী সমর্থকরা জামাত বিএনপির আক্রমনের শিকার হয়েছে।গত ২০১৩/১৪ সালে জামাত বিএনপির হত্যা, নাশকতার আসামীরা বিগত ৫ বছর আত্নগোপনে ছিল। উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষ্যে তারা নৌকার প্রতিপক্ষ হিসাবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে সাপোর্ট দেয়। এবং সুযোগটা লুফে নিয়ে তারা প্রকাশ্যে আসার সুযোগ পায়। বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করার সাথে সাথে ২৪ তারিখ রাত থেকেই তারা নৌকার কর্মীদের অাক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে ২৪ তারিখ রাতেই জামাত বিএনপির সন্ত্রাসীরা উপজেলার বহুড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধকালীন কমান্ডার আব্দুল গফফার সাহেবের বাড়ী আক্রমণ করে। তার, স্ত্রী, সন্তান, পুত্র বধুদের মারধোর করে। তার বাড়ী ভাংচুর করে। মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার হিসাবে তার বাড়ীর সামনে মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য ভাংচুর করে এবং অশ্রাব্য গালিগালাজ করে। সোনাবাড়ীয়া গ্রামের শুদ্ধচার মানুষ সুপ্রশাদ চৌধুরীর দোকানে হামলা হয়েছে। মারধোর করে দোকান থেকে টাকা পয়সা লুটপাট করে। কুশোডাঙ্গায় রামপ্রশাদ দত্তের বাড়ীতে হামলা চালায়। এর পর উপজেলার কেরালকাতা, রতনপুর, কিসমত ইলিশপুর, বলিয়ানপুর, সোনাবাড়ীয়া, ভাদিয়ালী, রামকৃষ্ণপুর, হিজালদী, চন্দনপুর, মদনপুর, কুশোডাঙ্গা, বাটরা, খোর্দ, রায়টা, যুগীখালী, সিংহলাল সহ অধিকাংশ গ্রামে নৌকার কর্মীদের উপর আক্রমণ চালায়। শত শত নৌকার কর্মী উপজেলা হাসপাতাল, পার্শবর্তী শার্শা উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অনেকে প্রাণ ভয়ে বাড়ীর বাহির হতে পাচ্ছেন না।
নৌকার প্রার্থী ও কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন অভিযোগ করেছেন নৌকার পক্ষে কাজ করার অপরাধে জামাত বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা তার কর্মীদের উপর হামলা করছে। শুরুতেই এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর কোন ভূমিকা না নেওয়ায় জামাত বিএনপির সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন জেলা আওয়ামীলীগে চরম দ্বন্দ্ব, এবং উপজেলা আওয়ামীলীগেও চরম দ্বন্দ্বের কারনে নেতাকর্মীরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় জামাত বিএনপি সুযোগটা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাচ্ছে।
নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন আরও বলেন বিএনপি-জামাত কতটা বেপরোয়া তা উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলই প্রমান করে।তিনি বলেন এবারের উপজেলা নির্বাচনে কোথাও ৫০% এর উপরে ভোটার উপস্থিতি না হলেও কলারোয়ার ক্ষেত্রে চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে ভোটার উপস্থিতির হার ৬৫% এর উপরে।কলারোয়ায় মোট ভোটার ১ লাখ ৮৩ হাজার। তার মধ্যে কাস্ট হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজারের মত। যা কিনা এবারের নির্বাচনে সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ উপস্থিতি।
বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনের ফলাফল পর্যালাচনা করে জানা যায় এই উপজেলায় নৌকার ভোট ৬০ হাজারের মত। জামাতের ভোট ৮০ হাজার আর বিএনপির ভোট কমবেশী ৩৫ হাজারের মত। ২৪ মার্চের নির্বাচনে নৌকার ৬০ হাজার ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে কমবেশী ৫০ হাজারের মত। আর জামাত বিএনপির ১ লাখ ১৫ হাজার ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ৬০ হাজারের কিছু বেশী। তিনি দাবী করেন আওয়ামীলীগের ভোটের কাস্ট হওয়া ৫০ হাজারের মধ্যে নৌকায় পড়েছে ৩৮ হাজার। আর আনারসে পড়েছে ১২ হাজারের মত। আর জামাত বিএনপির কাস্ট হওয়া ৬০ হাজার ভোটের পুরোটাই পড়েছে আনারসে। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রাহী প্রার্থীর সাথে আতাত করে নৌকা হারানোর সুযোগটাই নিয়েছে জামাত বিএনপি।