আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তেল রপ্তানির মুনাফা নির্ভর অর্থনীতি বদলে ফেলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে সৌদি আরবের মন্ত্রীসভা। গত বছর দেশটির ৭০ ভাগেরও বেশি আয় তেল রপ্তানি থেকে হয়েছিল, কিন্তু মূল্য পড়ে যাওয়ায় তেল রপ্তানি থেকে দেশটির আয় কমে যাচ্ছে।
পরিকল্পনায় সার্বভৌম একটি তহবিল গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর শেয়ার পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির সংস্কারের ‘ভিশন-২০৩০’ পরিকল্পনা ঘোষণা করে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তাদের দেশের অর্থনীতিকে ‘তেলাসক্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল আরাবিয়া সংবাদ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে আমরা তেল ছাড়াই চলতে পারবো।
সাক্ষাৎকারে তিনি যে সব সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরামকোর ৫ শতাংশের মতো পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেওয়া, দুই ট্রিলিয়ন ডলারের এক সার্বভৌম তহবিল গঠন করা, বিদেশি মুসলিম ও আরবদের দীর্ঘ দিন সৌদি আরবে কাজ করার সুযোগ করে দিতে নতুন ভিসা পদ্ধতি চালু করা, সামরিক উৎপাদন বাড়ানো ও খনিজ সম্পদ খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বৈচিত্র আনা এবং দেশের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো।
দুই দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানের কোম্পানি আরামকোর এক শতাংশ শেয়ারও যদি পুঁজিবাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে তা হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাথমিক দর প্রস্তাব (আইপিও), জানান প্রিন্স ।
এটি পুঁজিবাজারে ফেইসবুক বা আলিবাবার শেয়ার বিক্রির রেকর্ডকেও ছড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ব মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ সৌদি আরবের এই পরিকল্পনাকে ‘উচ্চবিলাসি, ব্যাপক উদ্যোগ’ বলে অভিহিত করেছে। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছে।
বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক সৌদি আরব সম্প্রতি তেলের মূ্ল্য পড়ে যাওয়ায় বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে। ঘাটতি মেটাতে গত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে দেশটি।
উল্লেখ্য, গেল বছর দেশটির তেল রপ্তানি আয় ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।