আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয় গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতির প্রেক্ষিতে সৃষ্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তোর সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যাকে জামার্নি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান দূতাবাসের সাবেক পরিবেশ উপদেষ্টা সুজিত চৌধুরী। গতকাল রোববার নগরীর জামালখানে জার্মান ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র ডি স্প্রাখে কার্যালয়ে ‘জার্মান শরণার্থী সমস্যা এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুজিত চৌধুরী বলেন, সিরিয় গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতিতে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপে ঢুকতে বাধ্য হল, জায়গা পাচ্ছিল না। পূর্ব ইউরোপিয় দেশগুলোর অকল্পনীয় অসহযোগিতার কারণে সীমান্তে আটকে ছিল হাজার হাজার মানুষ। হাঙ্গেরি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ছিল। জার্মানি ইউরোপের একমাত্র দেশ, যা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।
শরণার্থী সমস্যাকে জার্মানি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তুরষ্কের সঙ্গে সমঝোতা করে শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল নির্ধারণ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জার্মানি ইতিমধ্যে ১৫ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। আরও লক্ষ লক্ষ শরণার্থী নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে জার্মানি।
জার্মানি ইউরোপিয় ইউনিয়নের সংকট মোকাবিলা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা এখন ২৮। ইউনিয়নের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মিলিত সিদ্ধান্তের নিয়ম আছে। জার্মানির পর ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ড বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তবে এরা খুব অল্প সংখ্যক শরণার্থী নিতে রাজি। পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো বিশেষ করে চেক রিপাবলিক, হাঙ্গেরি, শ্লোভাকিয়া, শ্লোভেনিয়া এবং অন্যান্যরা ইউরোপের দরজা খ্যাত সীমান্তবর্তী দেশগুলো শরণার্থী ঢুকতে দিচ্ছে না। জার্মানি এটা মেনে নিতে পারছে না।
তিনি বলেন, জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মার্কেল ইউরোপিয় ইতিহাসের বৃহত্তম শরণার্থী সংকট সমাধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এজন্য জার্মান সমাজেও মার্কেল বিতর্কিত হচ্ছেন। নব্য অতি জাতীয়তাবাদী দলের উত্থান হয়েছে। তবে জার্মানির বৃহত্তর জনগোষ্ঠী মার্কেলকে সমর্থন করছে। জার্মানি তো অধিকাংশ অর্থনৈতিক বোঝা বহন করে। ইউরোপিয় ইউনিয়নকে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে। শেষ পর্যন্ত জার্মানির শরণার্থী বিষয়ক মানবিক সিদ্ধান্তের জয় হবে।
সভায় ডি স্প্রাখে’র পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিশেষত চট্টগ্রাম থেকে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী প্রতিবছর জার্মানিতে পড়তে যায়। বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রচন্ড রাজনীতি সচেতন। নিজ দেশ ছেড়ে জার্মানিতে যারা লেখাপড়া করতে যাচ্ছেন সেই দেশ বর্তমানে শরণার্থী সমস্যা নিয়ে জর্জরিত। এই শরণার্থী সমস্যা জার্মানিতে রাজনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কি কি পরিবর্তন সাধন করতে পারে সে বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে।